West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Pather Dabi Question and Answer
পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Pather Dabi Question and Answer
1. MCQ | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :
- 1. পুলিশস্টেশনে যারা মোটঘাট নিয়ে বসেছিল , তারা জাতিতে ছিল –
(A) বমি (B) বাঙালি (C) ইংরেজ (D) হিন্দিভাষী
Ans: (B) বাঙালি
- পুলিশস্টেশনে মোটঘাট নিয়ে বসে থাকা বাঙালির সংখ্যা হল—
(A) আট জন (B) ছ জন (C) পাঁচ জন (D) সাত জন
Ans: (B) ছ জন
- জগদীশবাবু পুলিশস্টেশনে বসে থাকা বাঙালিদের যেসব জিনিস খুলে দেখছিলেন , তা হল –
(A) টিনের তোরঙ্গ (B) ছোটো – বড়ো পুঁটলি (C) টিনের তোরঙ্গ ও বিছানাপত্র (D) ঘটিনের তোরঙ্গ ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি
Ans: (D) ঘটিনের তোরঙ্গ ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি
- যে – লোকটির প্রতি পুলিশের অত্যন্ত সন্দেহ ছিল , তাকে আটকে রাখা হয়েছে—
(A) একটি ঘরে (B) গারদে (C) খাঁচায় (D) দড়ির বাঁধনে
Ans: (A) একটি ঘরে
- জগদীশবাবু পেশায় ছিলেন –
(A) তেলের কারখানার মিস্ত্রি (B) পুলিশ (C) ডাক্তার (D) পিয়াদা
Ans: (B) পুলিশ
- পুলিশ যাঁর খোঁজে তল্লাশি করছিল , তিনি ছিলেন একজন—
(A) রাজদ্রোহী (B) দেশদ্রোহী (C) খুনি জন (D) অপরাধী
Ans: (A) রাজদ্রোহী
- পুলিশস্টেশনে বসে থাকা বাঙালিরা কাজ করত –
(A) বর্মা অয়েল কোম্পানিতে (B) বর্মা পুলিশে (C) ভামো শহরে (D) ম্যানডালে
Ans: (A) বর্মা অয়েল কোম্পানিতে
- বর্মা অয়েল কোম্পানি অবস্থিত ছিল –
(A) উত্তর ব্রহ্মদেশে (B) মিক্থিলায় (C) ভামো শহরে (D) রেঙ্গুনে
Ans: (A) উত্তর ব্রহ্মদেশে
- পোলিটিক্যাল সাসপেক্টের নাম ছিল –
(A) গিরীশ মহাপাত্র (B) নিমাইবাবু (C) সব্যসাচী মল্লিক (D) রামদাস তলওয়ারকর
Ans: (C) সব্যসাচী মল্লিক
- গিরীশ মহাপাত্রের বয়স হল –
(A) পঞ্চাশ – বাহান্ন বছর (B) কুড়ি – পঁচিশ বছর (C) ত্রিশ – বত্রিশ বছর (D) ষাট – সত্তর বছর
Ans: (C) ত্রিশ – বত্রিশ বছর
- গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল –
(A) তার কথা বলার কায়দা (B) তার উজ্জ্বল চোখ (C) তার হাসি (D) তার ফরসা রং
Ans: (B) তার উজ্জ্বল চোখ
- গিরীশ মহাপাত্রের চোখ দুটি ছিল –
(A) ধূর্ততায় ভরা (B) উদাস ও স্নিগ্ধ (C) নিষ্প্রভ ও বিষণ্ণ (D) গভীর জলাশয়ের মতো
Ans: (D) গভীর জলাশয়ের মতো
- গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক পরিচ্ছদ ছিল—
(A) পরিপাটি ও সাফসুতরো (B) নোংরা ও বিরক্তিকর (C) সাদাসিধে (D) অদ্ভুত ও হাস্যকর
Ans: (D) অদ্ভুত ও হাস্যকর
- গিরীশ মহাপাত্রের চুলে যে – গন্ধ ছিল , তার কারণ ছিল—
(A) গঞ্জিকা (B) প্রসাধনী (C) বহুদিন স্নান না করা (D) নেবুর তেল
Ans: (D) নেবুর তেল
- গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে পাওয়া গিয়েছিল –
(A) দুটি টাকা ও গণ্ ডা – ছয়েক পয়সা (B) দুটি টাকা ও গণ্ডা – চারেক পয়সা (C) এটি একটি টাকা ও গণ্ডা – ছয়েক পয়সা (D) একটি টাকা ও গণ্ডা – চারেক পয়সা
Ans: (C) এটি একটি টাকা ও গণ্ডা – ছয়েক পয়সা
- ‘ দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে ।’— বস্তুা হলেন –
(A) নিমাইবাবু (B) জগদীশবাবু (C) অপূর্ব (D) গিরীশ মহাপাত্র
Ans: (A) নিমাইবাবু
- ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো ।’- ‘ বুড়ো মানুষটি হলেন –
(A) জগদীশবাবু (B) অপূর্ব (C) গিরীশ মহাপাত্র (D) নিমাইবাবু
Ans: (C) গিরীশ মহাপাত্র
- মহাপাত্রের সঙ্গে তার যেসব মালপত্র ছিল , তা হল –
(A) ভাঙা টিনের তোরা ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা (B) ভাঙা টিনের তোরা ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি (C) টিনের তোরা ও একটি কাপড়ের ব্যাগ (D) একটি কাপড়ের ব্যাগ ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা
Ans: (A) ভাঙা টিনের তোরা ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা
- অপূর্বর অন্যমনস্কতা যে লক্ষ করেছিল , সে হল –
(A) গিরীশ মহাপাত্র (B) রামদাস তলওয়ারকর (C) তেওয়ারি (D) নিমাইবাবু
Ans: (B) রামদাস তলওয়ারকর
- এতবড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর । কার্যকুশলা মেয়েটি হল –
(A) তলওয়ারকরের স্ত্রী (B) অপূর্বর স্ত্রী (C) উপরতলার বাসিন্দা ক্রিশ্চান মেয়েটি (D) অপূর্বর বোন
Ans: (C) উপরতলার বাসিন্দা ক্রিশ্চান মেয়েটি
- তেওয়ারি বর্মা নাচ দেখতে যে স্থানে গিয়েছিল , তার নাম –
(A) ফয়া (B) শোএবো (C) মিথিলা (D) এনাভাং
Ans: (A) ফয়া
- সব্যসাচী মল্লিক পেশায় ছিল—
(A) ডাক্তার (B) পুলিশ (C) কেরানি (D) শিক্ষক
Ans: (D) ডাক্তার
- গিরীশ মহাপাত্রের জামার রং ছিল –
(A) গেরুয়া (B) রামধনু (C) সাদা (D) নীল
Ans: (B) রামধনু
- অথচ , গভর্নমেন্টের কত টাকাই না এরা বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে ।’— ‘ বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি বলতে বোঝানো হয়েছে –
(A) শিকার করা (B) অসম্ভব কল্পনা করা (C) শারীরিক কারণে দৌড়োনো (D) অপ্রাপ্য বস্তুর চাহিদা
Ans: (D) অপ্রাপ্য বস্তুর চাহিদা
- ‘ এমনি তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে । যা অভ্যাস হওয়ার কথা বলা হয়েছে , তা হল –
(A) সময়মতো খাওয়া (B) পুলিশের মার খাওয়া (C) অপমানিত হওয়া (D) বিশৃঙ্খলা
Ans: (C) অপমানিত হওয়া
- বড়োসাহেব অপূর্বকে পাঠিয়েছিলেন—
(A) ভামো – তে (B) ম্যানডালে (C) উত্তর ব্রহ্মদেশে (D) রেঙ্গুনে
Ans: (A) ভামো – তে
- অপূর্ব ও তলওয়ারকরের সঙ্গে ভামো – তে যারা গিয়েছিল , তারা হল –
(A) আরদালি ও পেয়াদা (B) তেওয়ারি ও পেয়াদা (C) তেওয়ারি ও আরদালি (D) পেয়াদা ও বড়োসাহেব
Ans: (B) তেওয়ারি ও পেয়াদা
- যে – দেশটিকে ম্লেচ্ছদেশ বলা হয়েছে , সেটি হল –
(A) ভারতবর্ষ বর্মা (B) পাকিস্তান (C) ইংল্যান্ড (D) বর্মা
Ans: (D) বর্মা
- ‘ তোমার চিন্তা নেই ঠাকুর ।’— ‘ ঠাকুর ‘ বলতে যাকে বোঝানো হয়েছে , তার নাম –
(A) তেওয়ারি (B) তলওয়ারকর (C) নিমাইবাবু (D) গিরীশ মহাপাত্র
Ans: (A) তেওয়ারি
- ‘ আশ্চয্যি নেহি হ্যায় বাবুসাহেব ।’— ‘ বাবুসাহেব টি হলেন –
(A) সব্যসাচী মল্লিক (B) অপূর্ব (C) বড়োবাবু (D) তলওয়ারকর
Ans: (D) তলওয়ারকর
- ‘ পথের দাবী ’ কাহিনিটি যে – উপন্যাসের অংশ বিশেষ , তা হল –
(A) অরক্ষণীয়া (B) পথের দাবী (C) সব্যসাচী (D) পল্লীসমাজ
Ans: (B) পথের দাবী
- ‘ কাকাবাবু , এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন …’- এক্ষেত্রে অপূর্বর ‘ কাকাবাবু ’ কে ?
(A) জগদীশবাবু (B) গিরিশ মহাপাত্র (C) নিমাইবাবু (D) রামদাস তলওয়ারকর
Ans: (C) নিমাইবাবু
- ‘ গভর্নমেন্টের কত টাকাই না এরা বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে ! ’ — ‘ বুনোহাঁস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
(A) জংলি হাঁসদের (B) চোর – ডাকাতদের (C) বিদ্রোহীদের (D) ইংরেজ কর্মচারীদের
Ans: (B) চোর – ডাকাতদের
- কোথা থেকে গিরীশের দুই বন্ধুর আসার কথা ছিল ?
(A) বর্মা থেকে (B) ভামো থেকে (C) রেঙ্গুন থেকে (D) এনাঞ্ঝাং থেকে
Ans: (D) এনাঞ্ঝাং থেকে
- তুমি তো ইউরোপিয়ান নও ! ‘ — কথাটি অপূর্বকে কে বলেছিলেন ?
(A) রেঙ্গুনের সাব – ইনস্পেক্টর (B) বর্মা সাব – ইনস্পেক্টর (C) বড়োসাহেব (D) বর্মার জেলাশাসক
Ans: (C) বড়োসাহেব
- “ গিরীশ মহাপাত্রের সাথে অপূর্বর পুনরায় কোথায় দেখা হয়েছিল ?
(A) পুলিশ – স্টেশনে (B) রেলস্টেশনে (C) জাহাজঘাটায় (D) বিমানবন্দরে
Ans: (B) রেলস্টেশনে
2. অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :
- ‘ পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল – কী দেখা গেল ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশের আলোচ্য অংশে দেখা গেল , পুলিশস্টেশনের সামনের হলঘরে জনা ছয়েক বাঙালি বসে আছে আর পুলিশ তাদের মালপত্র তল্লাশি করছে ।
- ‘ তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে । — কাকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে গিরীশ মহাপাত্রর ছদ্মবেশীধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে । বর্মা পুলিশ এই সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসার জন্য আটক করেছিলেন ।
- ‘ লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল । — লোকটির পরিচয় দাও ।
Ans: ‘ পথের দাবী ’ – তে লোকটি বলতে গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচীর কথা বলা হয়েছে । সন্দেহবশত পুলিশ তাঁকে আটক করলেও পরে আচার – আচরণ ও বেশভূষা দেখে পুলিশ গিরীশকে ছেড়ে দেয় ।
- ‘ সহসা আশঙ্কা হয় , ‘ — কোন্ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে রোগা চেহারার গিরীশ মহাপাত্র সামান্য কাশির পরিশ্রমে এতটাই হাঁপাতে থাকে যে , মনে হয় । মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । সেই মৃত্যু আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ।
- ‘ ভয় হয় এখানে খেলা চলিবে না , ‘ — উক্তিটি পরিস্ফুট করো ।
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে সব্যসাচী বিচিত্র পোশাকের ও অসুস্থতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেও তার বুদ্ধিদীপ্ত চোখ দুটিকে সে লুকোতে পারেনি । সে চোখের সামনে কপটতার চেয়ে সরে দাঁড়ানো ভালো ।
- ‘ কেবল এই জন্যই যেন সে আজও বাঁচিয়া আছে ।— ‘ এই জন্যই ’ বলার কারণ কী ?
Ans: ভগ্নস্বাস্থ্য গিরিশ মহাপাত্রকে দেখে মনে হত তার মৃত্যু আসন্ন । কিন্তু তার দৃষ্টির গভীরে এমন প্রাণশক্তি লুকিয়ে ছিল , যাকে মৃত্যুও ভয় পেত ।
- ‘ কী বল অপূর্ব । অপূর্বর কাছে কোন কথার সমর্থন আশা করা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে নিমাইবাবু ভগ্নস্বাস্থ্য গিরীশ মহাপাত্রর বাহারি পোশাকের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঙ্গার্থে যে – কথা বলেছিলেন তারই সমর্থনের কথা বলা হয়েছে ।
- তার আমি জামিন হতে পারি — কে , কীসের জামিন হতে চেয়েছে ?
Ans: নিমাইবাবু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিরিশ মহাপাত্রকে আটক করলেও তার বেশভুষা ও আচরণ দেখে অপূর্বর ধারণা হয় সে সব্যসাচী নয় । তাই অপূর্ব উক্ত বিষয়ে জামিন হতে চায় ।
- ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন । —নিমাইবাবুর চুপ করে থাকার কারণ কী ?
Ans: গিরীশ মহাপাত্র যে রাজদ্রোহী সব্যসাচী নয় , অপূর্বর এই আশ্বাসে নিমাইবাবু আস্থা রাখলেও সব্যসাচীর প্রখর বুদ্ধি সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল । তাই নিশ্চিত না হয়ে তিনি চুপ থেকেছেন ।
- ‘ দেখি তোমার ট্যাকে এবং পকেটে কী আছে ? ‘ গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে ও পকেটে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?
Ans: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাক থেকে পাওয়া যায় একটি টাকা ও গণ্ডার ছয়েক পয়সা । পকেট থেকে পাওয়া যায় একটা লোহার কম্পাস ও ফুটরুল । এ ছাড়া বিড়ি – দেশলাই ও গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় ।
- ‘ দেখো জগদীশ , কিরুপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি । ব্যক্তিটিকে সদাশয় বলা হয়েছে কেন ?
Ans: নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে তল্লাশির সময় তার পকেটে গাঁজার কলকে পান । সে – সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সে জানায় কলকেটি নিজের চেয়ে অপরের প্রয়োজনাথেই তার পকেটে । তাই নিমাইবাবুর এই উক্তি ।
- ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— বুড়ো মানুষ কোন্ কথা বলেছিলেন ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে আলোচ্য অংশে বুড়ো মানুষ অর্থাৎ প্রৌঢ় নিমাইবাবু , গিরীশ মহাপাত্রকে তার স্বাস্থ্যের কথা মনে রেখে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ।
- ‘ বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন । বড়োবাবুর হাসার কারণ কী ছিল ?
Ans: গিরিশ মহাপাত্রের উৎকট নেবুর তেলের গন্ধে থানাসুদ্ধ সব লোকের মাথা ধরিয়ে দেওয়ায় জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । এটাই বড়োবাবুর হাসির কারণ ।
- ‘ অপূর্ব রাজি হইয়াছিল । কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকরের স্ত্রীর অনুরোধ ছিল বাড়ির কেউ না আসা পর্যন্ত অপূর্বকে তার হাতে তৈরি মিষ্টান্নে জলযোগ সম্পন্ন করতে হবে । সে – কথায় অপূর্ব রাজি হয়েছিল ।
- ‘ তা ছাড়া এত বড়ো বন্ধু।— ‘ বন্ধু ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে ‘ বন্ধু ‘ বলতে অপূর্বের ঘরের উপরের তলায় বসবাসকারিণী ক্রিশ্চান মহিলার কথা বলা হয়েছে । তিনি অপূর্বর টাকাপয়সা ছাড়া বাকি জিনিস চোরের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন ।
- ইত্যবসরে এই ব্যাপার । কোন ব্যাপারের কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে অপূর্বর সহকর্মী তেওয়ারি , বর্মা নাচ দেখতে ফয়ায় যাওয়ার অবসরে তাদের বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছিল । এই ব্যাপারের কথাই এখানে বলা হয়েছে ।
- ‘ তিনি আমার আত্মীয় , আমার পিতার বন্ধু।— ‘ তিনি ‘ প্রশ্ন বলতে যাঁর কথা বলা হয়েছে , তাঁর পরিচয় দাও ।
Ans: উদ্ধৃতাংশে ‘ তিনি ‘ বলতে থানার বড়োবাবু নিমাইবাবুকে বোঝানো হয়েছে । তিনি অপূর্বর বাবার বন্ধু তাই তার পিতৃস্থানীয় । নিমাইবাবুর চাকরির পিছনে অপূর্বর বাবার অবদান ছিল ।
- ‘ তিনি ঢের বেশি আমার আপনার।– কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করা হয়েছে ?
Ans: এক্ষেত্রে ‘ তিনি ‘ হলেন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক । ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয়স্থানীয় হলেও দেশপ্রেমিক সব্যসাচীকে দেশভক্ত অপূর্বর বেশি আপন বলে মনে হয়েছে ।
- ‘ বাবুজি , এসব কথা বলার দুঃখ আছে।— কোন্ সব কথা বললে দুঃখ হতে পারে বলা হয়েছে ?
Ans: উদ্ধৃতিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকার । দুঃখ ঘটার মতো কথাগুলি হল ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয় হলেও স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মনিয়োগকারী সব্যসাচীই তার বেশি আপন ।
- ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি / — কোন্ ঘটনা ?
Ans: ‘ ঘটনাটি ’ হল ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাগ্যে জুটেছিল একরাশ লাঞ্ছনা ।
- ‘ মনে হলে দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যাই।— কোন কথা মনে করে অপূর্বের এই মনোবেদনা ?
Ans: অপূর্ব বিনাদোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া সত্ত্বেও উপস্থিত ভারতীয়রা অভ্যেসবশত এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই কথা মনে করেই অপূর্বর এই মনোকষ্ট ।
- ‘ আমার ইচ্ছা তুমি একবার সবগুলো দেখে আস / —কী দেখে আসার কথা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর বড়োবাবু তাদের ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা এবং প্রোমে – এর অফিসগুলির বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের কথা বলেছেন । সেগুলি অপূর্বকে দেখে আসার কথা বলেছেন ।
- ‘ এই সেই গিরীশ মহাপাত্র / — ‘ এই সেই ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রকে দু – বার দেখেছিল । প্রথমবার থানায় আর দ্বিতীয়বার রেলওয়ে স্টেশনে । অপূর্বর বর্ণনা অনুযায়ী রামদাস সহজেই তাকে চিনে নেয় ও এমন মন্তব্য করে ।
- কিন্তু তোমার বাপু একটা ভুল হয়েছে , কার ,, কোন ভুল হয়েছিল ?
Ans: অপূর্বকে প্রথমবার পুলিশ থানায় দেখে গিরীশ মহাপাত্র তাকে পুলিশের লোক ভাবে । দ্বিতীয়বার রেলস্টেশনে তাদের দেখা হলে , অপূর্ব তার ভুল ভাঙাবার জন্য তাকে এই কথা বলে ।
- কিন্তু এই হাসিতে তলওয়ারকর যোগ দিল না । তলওয়ারকর হাসিতে যোগ দিল না কেন ?
Ans: রেলস্টেশনে গিরীশ মহাপাত্রকে এক ঝলক দেখেই তলওয়ারকর তাকে পুলিশের সন্দেহভাজন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বলে সন্দেহ করেছিল । তাই অপূর্বর হাসির কথায় সে যোগ দিতে পারেনি ।
- ‘ ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল ।’— ‘ ভ্রম’টি বলা হয়েছে ?
Ans: ভামো যাত্রাকালে ট্রেনে প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকায় অপূর্ব রাত্রের ঘুমটা ভালোই হবে ভাবলেও পুলিশি তদন্ত ও ভারতীয় বলে তাকে অসম্মানিত হতে হয় । তার ধারণা ‘ ভ্রমে ‘ পরিণত হয় ।
- গিরিশ মহাপাত্রের গায়ে কোন ধরনের পোশাক ছিল ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি আর তার বুকপকেট থেকে একটি বাঘ – আঁকা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । তবে কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না ।
- খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে একটি টাকা , গণ্ডা – ছয়েক পয়সা , একটি লোহার কম্পাস , মাপ করার কাঠের ফুটরুল , কয়েকটি বিড়ি , একটি দেশলাই এবং একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল ।
- ‘ অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেই দিকেই চাহিয়া ছিল— মুগ্ধ অপূর্ব কোন্ দিকে চেয়েছিল ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত দুটি চোখের দিকে চেয়েছিল ।
- সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য– ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উদ্ভিটির বন্ধা বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু । তিনি এখানে ‘ সে ‘ বলতে রাজবিদ্রোহী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলেছেন ।
- থানায় আটক করা হ – জন বাঙালি রেঙ্গুনে এসেছিল কেন ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে থানায় আটক করা হ – জন বাঙালির প্রত্যেকেই উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি । কিন্তু জল – হাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অন্য কাজের খোঁজে রেঙ্গুনে চলে এসেছিল ।
- ‘ পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে কখন এমন উক্তি করা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের কাছে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । গিরীশ জানায় যে , সে বন্ধুবান্ধবদের গাঁজা দিলেও নিজে খায় না । তার এ কথায় চটে গিয়ে জগদীশবাবু প্রশ্নোত উক্তিটি করেছিলেন ।
- ‘ জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন— জগদীশবাবুর চটে ওঠার কারণ কী ছিল ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণ গিরীশ মহাপাত্রের আচার – আচরণে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিল । এ জন্যেই জগদীশবাবু চটে গিয়েছিলেন ।
- কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এমন উক্তি করেছেন ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু পুলিশের চোখে সন্দেহভাজন হিসেবে ধৃত গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পরিপাট্য দেখে ; সহাস্যে অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন মন্তব্য করেছিলেন ।
- ‘ তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? ‘ — কোন্ বস্তুটি পকেটে ছিল ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পাওয়া গাঁজার কলকের কথা নিমাইবাবু বলেছেন ।
- ‘ আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম’— বস্তুা কী মাথায় তুলে নিয়েছেন ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর মতে শতসহস্র পরাধীন দেশবাসীকে অবর্ণনীয় অপমান – অত্যাচারের হাত থেকে যে দেশপ্রেমিক বিপ্লবীরা উদ্ধার করতে চায় , তাঁদের সে অন্তরের আপন বলেই মনে করে । তাঁদের আপনার বলে মনে করায় যে দুঃখই থাক তা অপূর্ব সহ্য করতে প্রস্তুত । এ দায়িত্বই সে মাথায় তুলে নিয়েছে ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :
1. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ – র মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বর্মা আসেন । পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা তাঁকে আটক করলেও বেশভূষা ও চেহারার বিভ্রান্তিতে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয় । বছর বত্রিশের সব্যসাচীর গায়ের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে । রোগা চেহারার মানুষটি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপাতে ও কাশতে থাকেন । দেখে আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বুঝি তার ফুরিয়ে এসেছে । তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে তার রোগা মুখের দুটি চোখের অদ্ভুত দৃষ্টির জন্য ।
2. কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।’- কার চোখের কথা বলা হয়েছে ? চোখদুটির বর্ণনা দাও ।
Ans: চোখ দুটির বর্ণনা উত্তর উদ্ধৃতাংশে শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে ।
অদ্ভুত বেশভূষাধারী ও রুগ্ণ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তার চোখ দুটি । সে – চোখ ছোটো কী বড়ো , টানা কী গোল , দীপ্ত কী প্রভাহীন সে – বিচার করতে যাওয়া বৃথা । অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো চোখ দুটিতে এমন কিছু আছে যেখানে কোনো খেলা চলবে না , যেখান থেকে সাবধানে দূরে দাঁড়ানোই শ্রেয় । আসলে গিরীশ মহাপাত্রের চোখ ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সব্যসাচী মল্লিককেই প্রকাশ করে ।
3. বার্বুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে ।’— ‘ বাবুটি ’ কে ? তার শখ যে বজায় আছে , তা কীভাবে বোঝা গেল ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র আলোচ্য অংশে নিমাইবাবুর কথায় ‘ বাবুটি ’ হল ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র । → গিরীশ মহাপাত্রের মাথার বাহারি ছাঁট , চুলে সুগন্ধি তেল , পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম কালো শাড়ি , পকেটে বাঘ আঁকা শখ বজায় থাকার লক্ষণ রুমাল , পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু , হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি তার শখ ‘ বজায়ের পরিচয় দেয় ।
4. গিরীশ মহাপাত্রের চুলের পারিপাট্য কীরুপ ছিল , তা সংক্ষেপে লেখো ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনার সঙ্গে লেখক তাঁর চুলের পারিপাট্যের সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন । তাঁর মাথার সামনের দিকের চুল বড়ো থাকলেও পিছনের দিকে তা প্রায় ছিল না বললেই হয় । তেল চুলের পরিপাট্য চুপচুপে চুলের মাঝখান দিয়ে সিঁথি কাটা । চুল থেকে নেবুর তেলের উগ্র অসহনীয় গন্ধ থানাসুদ্ধ লোকের এমন মাথা ধরিয়ে দিয়েছিল যে , জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেও তাঁরা তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ।
5. ‘ এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন , — ‘ লোকটি কে ? তাকে কোনো কথা জিজ্ঞেস না – করেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ লোকটি ‘ হল পুলিশস্টেশনে আটক সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্র ওরফে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক ।
‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব যে সব্যসাচী মল্লিককে জানতেন তিনি ছিলেন বহু ভাষা ও বিষয়ে সুপণ্ডিত । লোকটিকে ছেড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শী এবং বিদেশি ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক ডাক্তার । কিন্তু সেই সব্যসাচী মল্লিক হিসেবে পুলিশ যাকে আটক করেছিল তার আচার – আচরণ কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তাই অপূর্ব অনেকটা নিশ্চিত হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন ।
6. তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে ? তা পকেটে থাকার সপক্ষে যে – যুক্তিটি দেওয়া হয়েছিল , তা কতখানি সন্তোষজনক ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে তা হল একটি গাঁজার কলকে ।
পুলিশস্টেশনে তল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে গাঁজার কলকেটি পাওয়া যায় । দারোগা নিমাইবাবু কলকেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাপাত্র জানায় সে গাঁজা খায় না , কিন্তু সপক্ষে যুক্তি পথে কুড়িয়ে পেয়ে সেটি বন্ধুদের প্রয়োজনার্থেই পকেটে রেখেছে । অভিজ্ঞ দারোগা নিমাইবাবুর কাছে এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি । কেন – না গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা সেবনের লক্ষণ স্পষ্ট ছিল ।
7. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— ‘ বুড়োমানুষ ‘ কে ? তাঁর কোন্ কথা শুনতে বলা হচ্ছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ বুড়োমানুষ ‘ বলতে দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বুঝিয়েছেন । যে – কথা শুনতে বলা হচ্ছে । গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় আসেন । সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে । তল্লাশিতে তাঁর পকেটে গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন । দারোগা নিমাইবাবু তাঁর অভিজ্ঞতার জোরে মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন । তাই ভগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে নিমাইবাবু গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন ।
8. ‘ দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে । মিথ্যেবাদী কোথাকার ! -কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি ? তাকে ‘ দয়ার সাগর ’ ও ‘ মিথ্যেবাদী ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: আমাদের পাঠ্য শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষে পুলিশকর্মী জগদীশবাবু থানায় আটক যার উদ্দেশ্যে উক্তি সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্রের উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছেন ।
‘ থানায় গিরীশ মহাপাত্রের পকেট তল্লাশি করে গাঁজার কলকে পেয়ে নিমাইবাবু তাকে গাঁজা খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন । উত্তরে সে জানায় সে খায় না তবে বন্ধুদের তৈরি করে দেয় । এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত জগদীশবাবু তাকে ‘ দয়ার সাগর ‘ বলে বাচ্চা করেন এবং তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সব লক্ষণ প্রকট থাকায় তাকে মিথ্যেবাদী বলেন ।
9. ‘ সে যে বর্মায় এসেছে এখবর সত্য । – ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে । তার আসার খবরে পুলিশকর্মীরা কী কী করেছিলেন ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ সে ’ বলতে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে । সরকারি পুলিশ বাহিনীর কাছে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পৌঁছোনো মাত্রেই তাঁরা তল্লাশির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন । তারা পুলিশের তৎপরতা বর্মা এবং রেঙ্গুনে কর্মরত ও কাজের সন্ধানে আসা বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালান । এমনকি উপরও বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলা হয় ।
10. অপূর্ব কিছু আশ্চর্য হইয়া কহিল , — অপূর্ব কেন আশ্চর্য হল ? তার আশ্চর্য হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – তে অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর অপূর্বকে অন্যমনস্কভাবে বসে থাকতে দেখে সে বাড়ির চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা — এমন প্রশ্ন করে বসে । হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে অপূর্ব আশ্চর্য হয় ।
রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ খানাতল্লাশি বাড়িয়েও তাকে ধরতে ব্যর্থ হন । সব্যসাচীর ধরা না – পড়া বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার মতো সৌভাগ্যকে অপূর্বর অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল । তাই দৈনন্দিন কাজের মাঝে অপূর্ব কোথাও যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল ।
11. ‘ বাস্তবিক , এমন তৎপর , এত বড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর।— মেয়েটি কে ? তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বলার কারণ কী ?
Ans: আলোচ্য অংশে ‘ মেয়ে ‘ বলতে অপূর্বর বাড়ির উপরতলায় বসবাসকারী একজন ক্রিশ্চান মেয়েকে বোঝানো হয়েছে ।
যেদিন অপূর্বের ঘরে চোর ঢুকেছিল , সেদিন এই মেয়েটির জন্যই তার টাকাপয়সা ছাড়া বাকি সব জিনিসপত্র চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছিল । শুধু তাই নয় , মেয়েটি অপূর্বর সব ছড়ানো জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে , ফর্দ করে কী আছে আর কী কী চুরি গেছে তার নিখুঁত হিসাব পর্যন্ত তৈরি করে রাখে । মেয়েটির তৎপরতায় অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বিশেষণে ভূষিত করে ।
14. কিন্তু পুলিশের দল এমন কাণ্ড করলে , এমন তামাশা দেখালে যে ও – কথা আর মনেই হলো না ।— ‘ ও – কথা ’ বলতে কোন কথার উল্লেখ করা হয়েছে । পুলিশের দল কী কাণ্ড করেছিল ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ ও – কথা ’ বলতে অপূর্বর ঘরের চুরির অভিযোগের কথা বলা হয়েছে । রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবরে সরকারি পুলিশ বর্মা ও রেঙ্গুনে কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালাতে শুরু পুলিশের দলের কাণ্ড করেন । এই সময় গিরীশ মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী ধরা পড়লেও তাঁর অদ্ভুত পোশাক ও চেহারা দেখে খানিকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় । একজন বিপ্লবীকে ধরতে পুলিশের কাণ্ডকারখানা দেখে অপূর্ব তার অভিযোগটি জানাতেই ভুলে গিয়েছিলেন ।
15. ‘ তাহার উৎকট হাসির বেগ কোনোমতে আর একবার সংবরণ করিয়া শেষে কহিল , ‘ —তার হাসির উদ্রেকের কারণ কী ? সে শেষে কী বলল ?
Ans: পাঠ্য ‘ পথের দাবী ‘ রচনাতে ‘ তাহার ’ বলতে অপূর্বর কথা বলা হয়েছে । বন্ধুর কাছে পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্রর অদ্ভুত আচার – আচরণ ও বেশভূষার বিবরণ দিতে গিয়ে হাসির উদ্রেকের কারণ তাঁর হাসির উদ্রেক হয়েছিল ।
অপূর্ব কোনো মতে তাঁর হাসির বেগকে সংবরণ করে বন্ধু রামদাসকে জানালেন , প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে তা আর কেউ দেখেনি । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা অপব্যয় করে অসম্ভবের আশায় ছুটে মরছে ।
16. তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে …’- অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল ? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র লজ্জার কারণ অপূর্বর লজ্জার কারণ বাংলা দেশের অত্যাচারী পুলিশবাহিনীর একজন বড়োকর্তা নিমাইবাবু তাঁর বাবার বন্ধু , তাঁর আত্মীয়সম । লজ্জা মনে হওয়ার কারণ [ ] ব্যাপারটা অপূর্বর কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কারণ এই নিমাইবাবু দেশের শত্রু ইংরেজদের দ্বারা পুলিশবাহিনীতে নিয়োজিত হয়েছিলেন । তিনি ইংরেজদের নুন খেয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় ও অত্যাচার চালাতেন । ইংরেজের দাসত্বকারী এমন একজনকে আত্মীয় অপূর্বর লজ্জা হচ্ছিল ।
17. ‘ আমি ভীরু , কিন্তু তাই বলে অবিচারে দণ্ডভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না ‘ — বক্তা কাকে এ কথা বলেছিলেন ? কোন্ অবিচারের দণ্ডভোগ তাঁকে ব্যথিত করেছিল ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব তার সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে এ কথা বলেছিলেন । ফিরিঙ্গি ছোঁড়ারা বিনাদোষে অপূর্বকে তার নিজের দেশে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল । অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে ইংরেজ স্টেশনমাস্টার শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার অপরাধে তাকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয় । এই অকারণ লাঞ্ছনাই অপূর্বকে মনে মনে ব্যথিত করেছিল ।
18. এমন তো নিত্যনিয়তই ঘটছে- কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে উদ্ধৃতাংশে অপূর্বর জীবনের উদ্ধৃত অংশের ঘটনা এক অপমানজনক ঘটনার কথা বলা হয়েছে । অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি যুবক অপূর্বকে লাথি | মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে সাহেব স্টেশনমাস্টার অপূর্বকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল । যদিও স্টেশনটি ছিল ভারতবর্ষেরই এবং সেখানে যদিও বহু ভারতীয় উপস্থিত ছিল , তবু অপমানিত হওয়া অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় তারা এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই ঘটনা পরাধীন ভারতের অত্যাচার ও অপমানের দৈনন্দিন চিত্র ।
19. ‘ অতএব যাওয়াই স্থির হইল / – কোথায় যাওয়া স্থির হল ? কী কারণে সেখানে যাওয়া স্থির হয়েছিল ?
Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে বক্তা অপূর্ব কর্মসূত্রে তার ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিক্থিলা ও প্রোম শহরে যাওয়া স্থির হওয়ার কথা বলেছে ।
অপূর্বের বড়োসাহেব অপূর্বকে জানান যে , ভাষো – সহ তাদের ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা ও প্রোম শহরের অফিসে নানা ধরনের গোলযোগ ঘটছে । যেহেতু বড়োসাহেবের অবর্তমানে অপূর্বকেই সমস্ত ভার নিতে হবে , তাই সবকিছুর সঙ্গে তার পরিচয় থাকা উচিত । এইজন্য বড়োসাহেবের ইচ্ছা যে , অপূর্ব একবার সব অফিসে যাক ।
20. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে ! — ‘ ওই যে ’ বলে কাকে দেখানো হল ? অপূর্বের চকিত হওয়ার কারণ কী ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত অংশে ‘ ওই “ ওই যে সম্বোধন যে ’ বলে বক্তা অপূর্ব তার সহকর্মীকে যাকে দেখিয়েছিলেন তিনি হলেন ছদ্মবেশী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্র । অপূর্ব তার ঘরে চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়ে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট গিরীশ মহাপাত্রকে দেখেছিলেন । গিরীশের বেশভূষা অপূর্বর মনে হাসি জাগালেও তার একটা সন্দেহের কথা তিনি চকিত হওয়ার কারণ সহকর্মী রামদাসকে বলেছিলেন । সেই গিরীশকে সহসা স্টেশনে দেখতে পেয়ে অপুর্ব চকিত হয়ে উঠেছিলেন । ‘ আমাকে কিন্তু বাবু বুটমুট হয়রান করা ।
21. উক্তি ? তাকে ঝুটমুট হয়রান করা হয়েছে বলার কারণ কী ?
Ans: উদ্ধৃত উক্তিটি শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিকের ।
সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ তাকে পাকড়াও করার জন্য বর্মা ও রেঙ্গুনের কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের ওপর নজর রাখে । সেই কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে থানায় জেরা ও তল্লাশি করা হয় । কিন্তু তাঁর কাছে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন । অপূর্ব সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন । পরবর্তীকালে অপূর্বর সঙ্গে তাঁর দেখা হলে তিনি কথাগুলি বলেছিলেন ।
22. ‘ বাবুজি , মায়নে আপকো তো জরুর কঁহা দেখা —কার উক্তি । উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো ।
Ans: উদ্ধৃত উক্তিটি ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের । অন্তর্নিহিত অর্থ . হিন্দিভাষী রামদাস রেলস্টেশনে প্রথমবার ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে উক্তিটি করেছিলেন । উক্তিটির অর্থ হল , ‘ বাবুজি আমি আপনাকে অবশ্যই কোথাও দেখেছি । ইতিপূর্বে রামদাস হয়তো ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে অথবা তার ছবি কোথাও দেখেছিলেন কিন্তু সঠিক ভাবে তা মনে করতে পারছিল না । তাই তিনি বার বার সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে গিরীশ মহাপাত্র বা সব্যসাচীকে দেখে , মনে করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল ।
23. ‘ ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।– প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে বর্মা পুলিশের সাব – ইনস্পেক্টর । বাঙালি যুবক অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে ভামো যাচ্ছিলেন । তল্লাশির নাম করে পুলিশ যখন বার বার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলেন তখন প্রতিবাদ করায় পুলিশ তার প্রতি এমন উক্তি করেছিলেন । বর্মা পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তিটি শুধু অপূর্বর উদ্দেশ্যে নয় এ যেন সমগ্র ভারতীয়র উদ্দেশ্যে করা । এ থেকে ইংরেজ শাসনে ভারতীয়দের সামাজিক অবস্থান ও নিজের দেশে পরবাসী হয়ে থাকার ছবি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান ।
24. ‘ বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন । বক্তা কে ? তাঁর বাবা কাকে , কী চাকরি করে দিয়েছিলেন ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের অন্তর্গত আলোচ্য উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন অপূর্ব । নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর বাবার বন্ধু । অপূর্বর বাবা এই নিমাইবাবুকে ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে পুলিশের চাকরি করে কাকে , কী চাকরি দিয়েছে । এখন ব্রিটিশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা নিমাইবাবু দেশপ্রেমিকদের আটক করে ব্রিটিশের দাসত্ব করেন ।
25.‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।- নিমাইবাবু কে ? তার চুপ করে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করো ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশে নিমাইবাবু হলেন পুলিশের বড়োকর্তা বা দারোগাবাবু । চুপ থাকার কারণ → পুলিশের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেপ্তার করা । তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যায় সুপণ্ডিত , বহুভাষাবিদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । কিন্তু সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণ ও কালচার— এসব কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তা দেখে থানায় উপস্থিত অপূর্ব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে ; এই ব্যক্তি যে সব্যসাচী মল্লিক নয় তার সে জামিন হতে পারে । অপূর্বর এ কথায় খানিক দ্বিধাগ্রস্ত নিমাইবাবু চুপ করে ছিলেন ।
26. ‘ আজ্ঞে না মাইরি খাইনে । — কার উক্তি ? কী কারণে এমন উক্তি ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশস্টেশনে আটক , গিরীশ মহাপাত্র । খানাতল্লাশির সময় অন্যান্য আরও কয়েকটি জিনিসের সঙ্গে গিরীশের কাছ থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । থানার দারাগো নিমাইবাবুর প্রশ্নের উত্তরে ; সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে । কিন্তু নিমাইবাবুর অভিজ্ঞ চোখে মহাপাত্রের শরীরে গাঁজা খাওয়ার উত্তির কারণ বিভিন্ন লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে । তাই ভগ্ন – স্বাস্থ্যের গিরীশকে তিনি গাঁজা খেতে নিষেধ করেন । বয়স্ক নিমাইবাবুর এমন অনুরোধে মহাপাত্র পুনরায় গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে , প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল ।
27. ’ রামদাস চুপ করিয়া রহিল , কিন্তু তাহার দুই চোখ ছলছল করিয়া আসিল । – রামদাস কে ? তার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর রেঙ্গুনের অফিসের সহকর্মী ছিল রামদাস তলওয়ারকর । রামদাসের চোখ – মুখের অবস্থার পরিবর্তন অপূর্ব তাঁর জীবনের একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা রামদাসকে বলে । একদিন অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়া অপূর্বকে লাথি মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বের করে দেয় । অথচ এর প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় সাহেব স্টেশনমাস্টারও তাকে তাড়িয়ে দেয় । ভারতের একটি রেলস্টেশনে আরেক ভারতীয় এমন অসহ্য অপমানে উপস্থিত কেউই এগিয়ে আসে না । এ ঘটনার কথা শুনে দুঃখে ও লজ্জায় এক অব্যক্ত অপমানে সহমর্মী রামদাসের দু – চোখ ছলছল করে উঠেছিল ।
28. ‘ কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ ; ‘ — বক্তা কে ? তার এই বক্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর ।
অপূর্ব সহকর্মী ও বন্ধু রামদাসের কাছে পুলিশস্টেশনে ঘটা গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণের আদ্যোপান্ত বিবরণ তুলে ধরে । এ প্রসঙ্গে তথাকথিত বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে ; তাও জানায় । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা এভাবেই ‘ বুনো হাঁস ‘ তথা বিপ্লবীদের ধরার পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করছে । অপূর্বর এ কথায় রামদাস হেসে জানায় , চোর ধরার বদলে আসলে ‘ বুনো হাঁস ‘ ধরাই এখন পুলিশের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
29. রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :
“ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল ।’— ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে = সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কী জানা যায় ? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয় ?
Ans: আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশ থেকে গৃহীত । পাঠ্যাংশটি থেকে জানা যায় , পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী , ডাক্তারিতে বিলিতি ডিগ্রিধারী এক রাজদ্রোহী ।
সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে যাকে নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হল সে নিজের পরিচয় দিল গিরীশ মহাপাত্র বলে । রুগ্ণ চেহারার বছর ত্রিশ – বত্রিশের লোকটির সাজপোশাক ভারি অদ্ভুত । কিন্তু তার দৃষ্টি ছিল অন্তর্ভেদী । সে তেলের খনিতেই কাজ করত । বর্মা থেকেই সে রেঙ্গুনে এসেছে । তার কাছ থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল লোহার কম্পাস , কাঠের ফুটবুল , একটা টাকা , কিছু বিড়ি , একটা দেশলাই আর একটা গাঁজার কলকে । নিমাইবাবু তাকে গাঁজার কলকে প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় , কলকেটা সে পথে কুড়িয়ে পেয়ে রেখে দিয়েছে । সে নিজে গাঁজা খায় না বটে , তবে প্রয়োজনে অন্যকে বানিয়ে দেয় । কিন্তু তার কথায় কেউই বিশ্বাস করে না । বরং গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা , সাজপোশাক আচার – আচরণ ও কথাবার্তা থেকে থানায় উপস্থিত সকলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে , এই ব্যক্তি কোনোভাবেই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না । তাই তাকে নিয়ে খানিক হাসিতামাশার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
30. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক – আশাকের বিস্তারিত বিবরণ দাও ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী রূপই হল গিরীশ মহাপাত্র । ছদ্মবেশী সব্যসাচী এই উপন্যাসে যেন সম্পূর্ণ একটি আলাদা চরিত্ররূপে আমাদের কাছে ধরা দেয় । পুলিশস্টেশনের মধ্যে কাশতে কাশতে তার আবির্ভাব । রোদে পুড়ে তার গায়ের অত্যন্ত ফরসা রং প্রায় তামাটে হয়ে গেছে । বয়স ত্রিশ – বত্রিশের মধ্যে হলেও , অত্যধিক বুগণতার জন্য তাকে দেখে মনে হয় যেন আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে । তবে এমন শারীরিক গড়ন ও চেহারার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তার রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।
আসলে মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী সব কিছু লুকোলেও , অতলস্পর্শী চোখ দুটিকে তার পক্ষে লুকোনো সম্ভব ছিল না । পোশাক – আশাক তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তার পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । তবে এত শখশৌখিনতা – পরিপাট্য এসবই জাহাজযাত্রার ধকলে নোংরা ও মলিন এবং তার শরীরে গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ আর ক্লান্তির ছাপ বেশ স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছিল ।
31. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি । — কোন্ ঘটনার প্রশ্ন । কথা বলা হয়েছে ? এ ঘটনা বক্তাকে না বলার কারণ কী ছিল ?
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা হল অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর । ঘটনাটি হল , উদ্দিষ্ট ঘটনার ৮ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব ফিরিঙ্গি যুবকদের পরিচয় হাতে কোনো এক প্ল্যাটফর্মে অপমানিত ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন । সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন অপূর্ব । কিন্তু তিনি ভারতীয় বলে স্টেশনমাস্টার তাঁকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন ।
অপূর্ব তার অপমানের কাহিনি তার সহকর্মী রামদাসকে আগে বলেনি । এই জন্য রামদাস অভিমানের সঙ্গে অভিযোগ জানালে অপূর্ব বলে যে , নিজস্ব অপমান ব্যক্ত করা সহজ নয় । বিশেষত যেখানে শুধু নিজে নয় , সমগ্র জাতি জড়িত , তা প্রকাশ করা আরও বেশি অপমানের । ফিরিঙ্গি যুবকদের অপমান অপূর্বর কাছে বেদনার ছিল । কিন্তু তার চেয়ে বেশি বেদনার ছিল সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়রা তার সেই অপমানকে মেনে নিয়েছিল । এই ঘটনায় শোষিত , পীড়িত , অসম্মানে অভ্যস্ত এক পরাধীন জাতির পঙ্গু ও ক্লীব ছবিটি ফুটে ওঠে । যে – ছবি তরুণ দেশপ্রেমিক অপূর্বর কাছে গভীর যন্ত্রণা ও লজ্জার । পিতৃবন্ধু দারাগো নিমাইবাবুর চেয়ে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক কেন তার কাছে বেশি আপন তা বোঝাতে গিয়েই অপূর্ব মনের মধ্যে লুকোনো বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথাগুলো বলে ফেলে ।
32. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের যে – অংশ তোমাদের পাঠ্য , তা অনুসারে অপূর্ব চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের মুখ্য চরিত্র অপূর্ব একজন সৎ – শিক্ষিত – আদর্শবাদী ও সংবেদনশীল যুবক । চাকরির সন্ধানে তার বর্মায় আসা । পাঠ্যাংশে অপূর্বর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায়—
দেশপ্রেমিক : অপূর্ব পরাধীন ভারতের এক তরুণ দেশপ্রেমিক । সব্যসাচীর প্রতি সে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল । গিরীশ মহাপাত্রকে প্রথম দর্শনে সে হাসি সামলাতে না পারলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আগমন ও পুলিশি সতর্কতা সত্ত্বেও তার ধরা না পড়া অপূর্বকে বিচলিত করে তোলে । গিরীশ মহাপাত্রের প্রতি অপূর্বর সন্দেহ যত বেড়েছে সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধা । তত প্রগাঢ় হয়েছে । সহকর্মী রামদাসের কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি ইংরেজ ভৃত্য আত্মীয়ের চেয়ে অনাত্মীয় দেশপ্রেমিক সব্যসাচী তার বেশি আপনার । দেশের অপমান ভুক্তভোগী অপূর্বর বুকে বেঁধে । শরৎচন্দ্র সেই বাঙালি বিপ্লবী তরুণদের আদর্শে অপূর্বকে গড়ে তুলেছেন যাদের ধমনিতে পরাধীনতার ও দাসত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শোণিতের মতো প্রবাহিত । তাই সব্যসাচীর মতো রাজদ্রোহীরা অপূর্বদের আদর্শ নায়ক । এদের মধ্যেই তরুণ বিপ্লবীরা নিজেদের খুঁজে পেতেন ।
গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল : বিপ্লবী সব্যসাচীর দৃঢ়তা ব্যক্তিত্বকে অপূর্ব শ্রদ্ধা করলেও প্রকাশ্যে রাজদ্রোহিতার সাহস তার ছিল না । সেই কারণে ইংরেজ বিদ্বেষী অপূর্ব তার পিতার বন্ধু নিমাইবাবু ইংরেজ কর্মচারী জেনেও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল ।
এভাবেই ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কথক অপূর্ব পরাধীন ভারতের শিক্ষিত তরুণদের এক সার্থক টাইপ চরিত্ররূপে প্রতিভাত হয়েছে ।
33. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত পাঠ্য অংশে অপূর্বর রেলযাত্রার যে – বিবরণ দেওয়া হয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম চরিত্র অপূর্ব বড়োসাহেবের নির্দেশে অফিসের কাজে ও রেঙ্গুনে ভালো না লাগার কারণে এক বিকেলে আর্দালি ও হিন্দুস্থানি ব্রাহ্মণ পেয়াদা নিয়ে ভামোগামী ট্রেনে চড়ে বসে । তাকে স্টেশনে ছাড়তে আসে তার সহকর্মী রামদাস । গাড়ি ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে হঠাৎ সেখানে উদয় হয় পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্র । মহাপাত্রের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ না হতে হতেই অপূর্বর ট্রেন ছেড়ে দেয় । প্রথম শ্রেণির যাত্রী বলে তার কামরায় কেউ ছিল না । অপূর্ব সন্ধ্যাহিক সম্পন্ন করে স্পর্শদোষহীন খাবার খেয়ে শোবার উদ্যোগ নেয় । সে ব্যাঘাতহীন ঘুমের কথা ভাবলেও কয়েকটা স্টেশনের পরই তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে । সারারাত্রিতে অন্তত তিনবার পুলিশের লোক এসে তার নামঠিকানা লিখে নিয়ে যায় । অবশেষে অপূর্ব বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করায় বর্মার সাব – ইনস্পেক্টর রুঢ়ভাবে বলেন , যেহেতু সে ইউরোপীয় নয় তাই তারা ইচ্ছে করলেই তাকে ট্রেন থেকে টেনে নামিয়ে দিতে পারে । প্রথম শ্রেণির যাত্রীর পরিচয় দিয়ে নিজের অধিকার রক্ষার কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি । পরাধীন দেশের মানুষের দুর্দশা ও লাঞ্ছনার ছবি এভাবেই অপূর্বর ট্রেন যাত্রার ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ।
34. ‘ বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে- বাবুটি কে ? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বাবুটির পরিচয় বস্তুা হলেন পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ অধীনস্থ এক বাঙালি পুলিশকর্তা নিমাইবাবু । তিনি পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে চিহ্নিত ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন ।
বছর ত্রিশ – বত্রিশের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে । রোগা চেহারার মানুষটি যখন কাশতে কাশতে থানায় প্রবেশ করল তখন তার দেহের সামগ্রিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল সেটি দ্রুত বেগে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । কিন্তু তার রোগা মুখের দুটি চোখের দৃষ্টি ভারি অদ্ভুত । জলাশয়ের মতো গভীর সে চোখের সঙ্গে খেলা চলবে না । দূরে থাকতে হবে । সেই ক্ষীণ চোখের অতলে কোথাও যেন প্রাণশক্তি লুকিয়ে আছে , আর সে জন্যই সে বেঁচে আছে । গিরীশ মহাপাত্র যে অত্যন্ত শৌখিন মানুষ তা তার বেশভূষাতেই প্রমাণিত । চুলে বাহারি ছাঁট । তাতে সুগন্ধি নেবু তেল । গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি । পকেটে বাঘ – আঁকা রুমাল । পরনে বিলেতি মখমল পাড়ের কালো শাড়ি । হাঁটু পর্যন্ত মোজা লাল রিবন দিয়ে বাঁধা এবং পায়ে নাল লাগানো বার্নিশ করা পাম্প । হাতে হরিণের শিং দিয়ে বাঁধানো বেতের শৌখিন ছড়ি । এসব দেখেই নিমাইবাবু রসিকতার হলে কথাগুলি বলেছিলেন ।
35. রামদাস তলওয়ারকর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের একটি পার্শ্বচরিত্র হল রামদাস তলওয়ারকর । অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকর খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র না হয়েও যথেষ্ট গুরুদায়িত্ব পালন করেছে । তাকে অবলম্বন করেই পাঠ্য অংশে অপূর্ব নিজের ভাবনাচিন্তা ব্যক্ত করেছে । রামদাস তলওয়ারকর সহকর্মীর চেয়েও অনেক বেশি সহমর্মী ও বন্ধু । ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে দেখে আনমনা অপূর্বের বাড়ির পরিস্থিতি কুশল কিনা , তা সে জানার চেষ্টা করেছে । তার স্ত্রী প্রতিদিন অপুর্বর জলযোগ সরবরাহ করেছে । তলওয়ারকর অপূর্বর সমস্ত কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে তা সে অপূর্বর ঘরে চুরি ও উপরতলার ক্রিশ্চান মেয়ের দ্বারা সম্পদ রক্ষার গল্পই হোক বা ইংরেজ কর্তৃক অপূর্বর অপমানের কাহিনিই হোক । রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে দেখা অদ্ভূত দর্শন গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়েছে অপূর্ব । কিন্তু সঙ্গ দিতে গিয়ে তলওয়ারকর কখনোই অপূর্বর ছায়াতে পরিণত হয়নি । অপূর্বকে ট্রেনে তুলতে গিয়ে গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে তার মনে সন্দেহ জেগেছে । প্রখর বুদ্ধিমান ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচীও তার মন থেকে সন্দেহ দূর করতে পারেনি । রামদাস মনে মনে গিরীশের প্রকৃত পরিচয় হাতড়ে বেড়িয়েছে । এভাবেই বুদ্ধিতে , বন্ধুত্বে , সাহচর্যে এবং সমবেদনায় রামদাস স্বল্প পরিসরেও তার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে ।
36. ‘ নিমাইবাবু ‘ – র চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: অপরাজেয় কথাশিল্পী শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কালজয়ী রাজনৈতিক উপন্যাস ‘ পথের দাবী ‘ থেকে গৃহীত দশম শ্রেণির পাঠ্য অংশে ‘ নিমাইবাবু ‘ সম্পর্কে যা জানা যায় , তা হল — নিমাইবাবু হলেন কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর পিতৃবন্ধু , সেই সূত্রে আত্মীয় । অপূর্বর পিতা কোনো একসময়ে তাঁকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন । এই সূত্রে যে সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে , তা দু – পক্ষই বহন করে নিয়ে চলেছে । রেঙ্গুনের পুলিশস্টেশনে বাংলা পুলিশের দারোগা নিমাইবাবুকে ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় । তবে অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান নিমাইবাবুও সব্যসাচীকে চিনতে ভুল করে ফেলেন । তাকে সাধারণ গঞ্জিকাসেবক বলে ছেড়েও দেন । তবে তাঁর স্নেহপ্রবণ মন বোঝা যায় , যখন গিরীশ মহাপাত্ররুপী সব্যসাচীর রুগ্ণ দেহ দেখে তিনি কোমল স্বরে তাকে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো । এক্ষেত্রে এক প্রৌঢ় স্নেহশীল পিতার প্রতিচ্ছবি নিমাইবাবুর মধ্যে ফুটে ওঠে ।
37. পাঠ্যাংশটির ‘ পথের দাবী ‘ নামকরণ কতদূর সংগত আলোচনা করো ।
Ans: ‘ নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।
38. ‘ অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল— ‘ তাহার ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? তার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে হাসি গোপন করার কারণ কী ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , প্রশ্নোধৃত অংশে ‘ তাহার ’ বলতে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বোঝানো হয়েছে ।
রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করা হয় । সে কাশতে কাশতে থানার দারাগো নিমাইবাবুর সামনে এসে হাজির হয় । সেখানে অপূর্বও হাজির ছিল । লোকটির রোদে পোড়া তামাটে রং— অকাল বার্ধক্যের হাঁপানি অতিক্রম করে তার দৃষ্টি নিবন্ধ পরিচ্ছদের প্রতি হয় অতলশায়ী চোখ – দুটিতে । আচমকা নিমাইবাবুর দৃষ্টিপাত করে হাসি কথায় অপূর্বর সম্বিৎ ফেরে । সে গিরীশের বেশভূ গোপনের কারণ যা ও পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে । তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তবে পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । এই কিম্ভুৎ আর বিচিত্র সাজসজ্জার কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে অপূর্ব হাসি গোপন করেছিল ।
39. ‘ এমন তো নিত্য নিয়তই ঘটছে । এখানে কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব । সে বন্ধু ও সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর – এর কাছে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে ঘটা একটি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ; দেশ ও দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের প্রতি নিজের অন্তরের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে । মাতৃভূমির স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির সংগ্রামে যাঁরা প্রাণপণ সচেষ্ট , তাদের ‘ আপনার নয় ’ বলবার সাধ্য অপূর্বর নেই । কারণ অন্যায় অবিচারের শাস্তিভোগ করার যন্ত্রণা তাকেও সহ্য করতে হয়েছে । এ প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা সে বলে । একদিন কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়ার হাতে অপূর্বকে বিনা কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয় । এর প্রতিবাদে সাহেব স্টেশনমাস্টারের কাছে গেলে , সেখানেও তার কপালে জোটে অপমান এবং লাঞ্ছনা । তবে অপূর্বর কাছে এর চেয়েও বেদনাবহ ছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়দের নীরবতার অভ্যেস । এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত এক অসহায় দুর্বল ও ক্লীব জাতির দাসত্বের ছবি , তাকে দুঃখে – লজ্জায় এবং ঘৃণায় হতবাক করে দিয়েছিল । এক শিক্ষিত দেশপ্রেমিক তরুণের কাছে ব্যক্তিগত নয় যেখানে সমগ্র জাতির অপমান জড়িত ; তাকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেক বেশি লজ্জা ও অসম্মানের । অথচ এমন অন্যায় লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিনিয়তই প্রতিকারহীনভাবে ঘটে চলেছে । এ কথাই অপূর্বর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ।
40. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে । —প্রসঙ্গ কী ? চকিত হয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যে – কথাবার্তা হয়েছিল । তা আলোচনা করো ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , অপূর্বকে অফিসের কাজে রেঙ্গুন থেকে ভামোয় রওনা হতে হয় । বড়োসাহেবের নির্দেশ পেয়ে সে পরদিন বিকেলে ভামোর উদ্দেশে ট্রেনে চেপে বসে । ট্রেন ছাড়তে যখন মিনিট পাঁচেক বাকি তখন সে আচমকা গিরীশ মহাপাত্রকে প্ল্যাটফর্মে দেখতে পায় । এর আগে গিরীশকে সে পুলিশস্টেশনে সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক অবস্থায় দেখেছিল । অদ্ভুত বেশভূষার গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে এই নিয়ে অপূর্বর দ্বিতীয়বার দেখা হয় ।
অপূর্ব এবং গিরীশ মহাপাত্র পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে । অপূর্ব জানায় , সে ভামোর পথে চলেছে আর গিরীশ এনাঞ্ঝাং থেকে আগত দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছে । এই সময়েই গিরীশ জানায় পুলিশ তার মতো সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে অনর্থক হয়রান করছে । সে কোনোরকম কুকর্মের সঙ্গে জড়িত নয় । তখন প্রত্যুত্তরে অপূর্ব জানায় , সে কোনোভাবেই পুলিশের লোক নয় ঘটনাচক্রে কেবল ওখানে উপস্থিত ছিল । এমন পরিস্থিতিতে রামদাস গিরীশকে কোথাও দেখার কথা বললে , গিরীশ আশ্চর্য হয় না । শুধু বারবার অনুরোধ করতে থাকে যে , তার ওপর যেন কেউ মিথ্যে সন্দেহ না রাখে । কারণ সে ব্রাহ্মণ বংশীয় , লেখাপড়া – শাস্ত্রজ্ঞান— কিছুটা সেও জানে । কপালের দোষে আজ তার এই অবস্থা । কিন্তু অপূর্বর মতো বড়োমানুষদের বিষনজরে পড়লে আর হয়তো একটা চাকরিও জুটবে না । এইসব বলতে বলতেই গিরীশ পুনরায় ‘ নমস্কার ‘ – ‘ রাম রাম ‘ ইত্যাদি জানিয়ে কাশির বেগ সামলিয়ে বিদায় নিয়েছিল ।
41. ‘ কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়োবাবু ।— ‘ জানোয়ারটা ‘ বলতে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে ? তাকে ওয়াচ করার দরকার নেই কেন ?
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ জানোয়ারটা ’ বলতে পুলিশস্টেশনে আটক গিরীশ মহাপাত্রকে বলা হয়েছে । বক্তা পুলিশের কর্মচারী জগদীশবাবু ।
বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশ গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করে । কিন্তু তার রোদে পড়া তামাটে রং , হাঁফ ধরা কাশির দমক ও অকাল বার্ধক্যের ভগ্ন – স্বাস্থ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় । বিশেষত তার বেশভূষার বাহার আর পরিপাট্য দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ব্যক্তিটি সব্যসাচী নয় । কারণ বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সঙ্গে সন্দেহভাজন ; কারখানার মিস্ত্রি গিরীশের কোনো মিল থাকাই সম্ভব নয় । খানাতল্লাশির সময় তার ট্যাঁক ও পকেট থেকে বিভিন্ন মামুলি সামগ্রীর সঙ্গে একটি গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় । গিরীশ গাঁজা খাওয়ার কথা বারবার অস্বীকার করলেও , গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণই তার বিদ্যমান দেখে পুলিশ নিঃসংশয় হয় । নিমাইবাবু মহাপাত্রকে ছেড়ে দিলেও , এ শহরে নজর রাখার কথা বলেন । কারণ বর্মায় সব্যসাচী এসেছে । এ খবর নির্ভুল । এ কথায় জগদীশবাবু বলেন , তবে গিরীশ মহাপাত্রকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই ।
*There will be much more sections divided into the above syllabus which will be told in Live Session
You can Purchase our Courses:
- 10th – 12th exam PreparationJEE / NET PreparationGovt. Job exam PreparationComputer CoursesEngineering Courses
The session will be conducted on “Cademy” Mobile App.
Do Subscribe our YouTube Channel for Free Classes: @cademyindia
Contact for any Support : Cademy India Pvt. Ltd.
+91-700-1237600